কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকায় কথিত সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহিন আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ভণ্ডামি, ব্ল্যাকমেইল এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে নিজ গ্রামেই মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর চৌমুহনী বাজারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। কনেশতলা, একবালিয়া, ডলখুলিয়া এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই প্রতিবাদে যোগ দেন।
মানববন্ধন ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বক্তারা শাহিনকে প্রতারক বলে আখ্যা দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, শাহিন দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
স্থানীয়দের দাবি, শাহিন কখনো অ্যাডভোকেট, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো রাজনৈতিক কর্মী পরিচয় দিয়ে নানা রকম প্রলোভন দেখান। তিনি ফেসবুকে ভুয়া পেজ খুলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শাহিন প্রতিবন্ধী, বিধবা এবং অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়ানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক ভুক্তভোগী লজ্জা এবং ভয় থেকে প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না।
শুধু প্রতারণা নয়, তার বিরুদ্ধে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে একাধিক বিয়ের অভিযোগও রয়েছে। প্রবাসী এক নারীকে ব্ল্যাকমেইল করে তিনি জোরপূর্বক বিয়ে করেন। পরে ফাঁদে ফেলে আরও চারটি বিয়ে করেন। অভিযোগ রয়েছে, নারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তিনি তাদের আর্থিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন।
স্থানীয় ঠিকাদাররাও শাহিনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বক্তাদের দাবি, গুলিয়ারা ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছেন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করেন।
বক্তারা বলেন, শাহিন আলম দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা বলেন, শাহিন আলমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন নির্যাতিত হয়েছি। আজ আমরা সাহস করে রাস্তায় নেমেছি। আমরা চাই দ্রুত তার গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
পরে উত্তেজিত জনতা শাহিন আলমের ছবি পায়ে দলিত করে জুতা নিক্ষেপ করেন।
এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা আর নীরব থাকব না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।
অভিযুক্ত শাহিন আলম এই অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন। তিনি ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।