জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে দল ও ধর্মের মধ্যে কোন অধিকারের ব্যবধান থাকবে না। এটাই বাংলাদেশে সকলের একই অধিকার ভো করা ন্যায্য অধিকার থাকবে। তিনি বলেন, আমরা একটি বৈষম্য মুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, দু:শাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ চাই এবং সেই বাংলাদেশ অবশ্যই হতে হবে আল্লাহর বিধানের ভিত্তিতে। আল কোরআনের ভিত্তিতে। এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে যেখানে অন্যান্য ধর্মের অনুসারিরা তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। ইসলাম সকল ধর্মের সম্মান বজায় রাখে। মানবিক বিধান কায়েমে আমরা এক, কোন পার্থক্য নেই। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা বাংলাদেশটাকে গড়বো। শুক্রবার সকালে নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বর্তমান একটি নির্বাচন কমিশন হয়েছে। তারা বলেছে ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো একটা নির্বাচন উপহার দেবে। আমরা তাদের একটি এসিড টেস্ট দেখতে চাই। তারা জাতীয় সংসদের নির্বাচন যেটা দিয়ে দেশ শাসন হবে ৫ বছরের জন্য। সেই নির্বাচনের আগে জনগণ এখন সাফার করছে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিধি না থাকার কারনে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনটা দিন। আমরা দেখি আপনাদের সদিচ্ছা এবং সক্ষমতা কতটুকু। এটার প্রমান আপনারা পেশ করুন। যদি এতে জনগণ সন্তুষ্ট হয় তাহলে পরবর্তীতে জনগণ আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা দেবো। আর এখানে কোন কিছু ধরা পড়ে তাহলে জনগণ আপনাদের লাল কার্ড দেখাবে।
তিনি বলেন, আমরা কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠিকে সুবিধা দেওয়ার কোন ধরণের সুপারিশ আমরা মনবো না। আমরা জনগণের সুবিধা দেওয়ার সকল সুপারিশ মেনে নেব। তিনি সকলকে নিজেকে গড়ার অনুরোধ জানিয়ে ঘরে ঘরে ন্যায় এবং সত্যের আওয়াজ পৌছে দেওয়ার আহ্বান জানান।
মহানগর জামায়াতের আমীর কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. ছামিউল হক ফারুকী, জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল করিমসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, অতীতে যা চললো এখনো যদি তাই চলে তাহলে এত রক্ত কেন ঝরলো। এত জীবন গেল কেন? এই জাতীর কাছে আমরা কীভাবে মুখ দেখাবো। তিনি জঞ্জালমুক্ত, কলুষমুক্ত, দু:শাসনমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজনে আমরা আরেকবার জীবন দিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবো।
জামায়াতে আমীর বলেন, নারী অধিকার সংস্কারের নামে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা হয়েছে। সে রিপোর্টের বেশ কিছু জায়গায় কোরআন এবং সুন্নাতের সম্পূর্ণ খেলাপ কিছু সুপারিশমালা পেশ করা হয়েছে। আমাদের প্রথম কথা হচ্ছে, যে কয়েকজন এই সুপারিশ পেশ করেছেন তারা এদেশের সাড়ে নয় কোটি মায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা সমাজকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চান, আমরা সে জায়গায় তাদেরকে নিতে দেব না ইনশাল্লাহ। এদেশের মানুষের একটা সংস্কৃতি একটা আদবকায়দা আছে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আঘাত করলে পুরা শৃঙ্খলা তছনছ হয়ে যাবে। এটা আমরা মানবো না। এটা আমরা মানতে পারি না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করবো আপনি দেশে ফিরে এটা বাতিল করেন। আর যদি এরকম কোন কমিশন করতে হয় তাহলে সকল শ্রেণী-পেশার দল ও আদর্শের মানুষকে নিয়ে করতে হবে। সেখানে ঈমানদার মহিলাদেরও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। যারা কোরআন হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন। তার পরে দেখা যাবে কি আসে। তখন আমরা বিবেচনা করবো।